লটকানো যাদু (سِحْرُ الْمُعَلَّق) বা সিহরুল মুয়াল্লক্ব কী?
লটকানো যাদু বা সিহরুল মুয়াল্লক্ব হলো এক প্রকারের কালো জাদু, যেখানে যাদুকৃত বস্তু যেমন তাবিজ, হাড়, কাপড়,নকশা, চুল, নাপাক বস্তু বা মন্ত্রপুত কোনো জিনিস গাছের ডালে, ঘরের ছাদে, জানালার গ্রিলে, ফ্যানের ওপরে বা অন্য কোনো উচ্চস্থানে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো বাতাসের মাধ্যমে যাদুর প্রভাব বিস্তার করা।
এই যাদু সাধারণত প্রেম, বশীকরণ, বিবাহে বাধা সৃষ্টি, দাম্পত্য কলহ, মানসিক অস্থিরতা, শারীরিক অসুস্থতা বা প্যারালাইসিস সৃষ্টি, এবং কারো শরীরে জিন প্রবেশ করানো ইত্যাদি উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে।
—
❖ লটকানো যাদুর লক্ষণসমূহ
অস্বাভাবিক আকর্ষণ বা আসক্তি: হঠাৎ করে কোনো ব্যক্তির প্রতি অস্বাভাবিকভাবে আকৃষ্ট হওয়া বা তার প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা অনুভব করা।
দাম্পত্য কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অকারণ দ্বন্দ্ব, ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব বৃদ্ধি পাওয়া।
বিবাহে বাধা: বিয়ের প্রস্তাব বারবার নষ্ট হয়ে যাওয়া বা অদ্ভুত কারণে বিয়ে না হওয়া।
অদ্ভুত স্বপ্ন: উঁচু জায়গা থেকে পড়া, বাঁধা অনুভব করা, অন্ধকারে আটকে যাওয়া, কারো ডাক শুনে জেগে ওঠা ইত্যাদি স্বপ্ন দেখা।
আতঙ্ক ও ভয়: হঠাৎ করে ভয় পাওয়া বা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়া।
মাথা ভারী ও অলসতা: মাথা ভারী লাগা, শরীরে অলসতা, কোনো কাজে মনোযোগ দিতে না পারা।
রাগ বৃদ্ধি: অজানা কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া এবং রাগ বেড়ে যাওয়া।
নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা স্থানের প্রতি বিরক্তি: কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা স্থান নিয়ে অহেতুক ভয় বা বিরক্তি অনুভব করা।
শারীরিক অসুস্থতা: মাথার রগ ভারী লাগা, শরীরের বিভিন্ন অংশ অবশ হয়ে যাওয়া, পায়ের রগে স্পন্দন অনুভব করা।
জিনের আছর বা বশীকরণের লক্ষণ: জিনের উপস্থিতি অনুভব করা বা বশীকরণের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া।
ব্রেইন দুর্বল এবং সব কিছু ভুলে যাওয়া ইত্যাদি।
—
❖ লটকানো যাদুর ইসলামিক চিকিৎসা
শরিয়তসম্মত রুকইয়াহ করুন: কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী রুকইয়াহ শারঈয়াহ পালন করুন।
অভিজ্ঞ রাক্বীর পরামর্শ নিন: বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ রাক্বীর সঙ্গে পরামর্শ করে চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
সন্দেহজনক বস্তু অপসারণ: ঘর বা আশেপাশে যদি কোনো তাবিজ, হাড়, কাপড়, চুল বা অন্য সন্দেহজনক বস্তু ঝুলতে দেখেন, তবে রুকইয়াহ পড়ে তা ধ্বংস করুন।
রুকইয়াহর পানি ছিটান: সন্দেহ জনক জায়গায় রুকইয়াহ পারি ছিটাবেন।
নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করুন: বিশেষ করে সূরা বাকারা, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস বেশি বেশি পড়ুন।