Facebook
Twitter
LinkedIn

রুকইয়াহ বনাম কবিরাজি

কিভাবে বুঝবেন আপনে  রাকির কাছে গিয়েছেন নাকি কবিরাজ/যাদুকরের কাছে গিয়েছেন?

……………………………………………………………………………………………………

কিভাবে বুঝবেন সে যাদুকর /কবিরাজ কিনা?

১. নাম ও মায়ের নাম জানতে চাইবে।

এবং বলবে হজিরা বা ইস্তেখারা করবে।অনেকে জ্বিনের সহায্যে কাজ করে শনি মঙ্গলবার।

২. যদি বলে আপনার কাপড়ের অংশ লাগবে/আন্ডারগার্মেন্টেসের অংশ লাগবে/ চুল লাগবে/ দাড়ি লাগবে/কানের দুলটা/গলার চেইনটা লাগবে/হাতের চুড়ি লাগবে।

৩. যদি সে বলে “একগ্লাস পানি আনেন। আর একটা ছুড়ি আনেন। এবার গ্লাসের পানিতে ছুড়ি চালান।” আপনি চালাবেন আর আপনার মনে হবে আপনি ছুড়ি পানিতে না গোশতের মধ্যে চালাচ্ছেন।

৪. যদি সে আপনার বাসায় আসে, বসে পড়ে এদিক সেদিক তাকায় আর কি যেন বিড়বিড় করে। সুন্দর সুন্দর কথা বলে কিন্তু সেগুলো কুরআনের আয়াত নয়, হাদীসের দোয়াও নয়।

৫. যদি এমন বলে (সাধারনত মেয়েদের বলে) যে, আপনি যদি সুস্থ হতে চান তাহলে “এই জিনিস”টা আমাকে আপনার গোপন অঙ্গে ঘষতে হবে। যদি সুস্থ হত চান তাহলে আপনার এই এই অঙ্গ আমাকে ধরতে হবে/ আপনাকে উলঙ্গ হতে হবে -ইত্যাদি ইত্যাদি। (নাউজুবিল্লাহ)

৬. যদি বলে যে, এক বোতল পানি আনেন। বোতলটা টেবিলের উপর/ওয়ারড্রোবের উপর রাখুন। অথবা বলে যে, বোতলের মুখ খুলে হাতে রাখুন। আমি যখন বলব তখন সাথে সাথে মুখ লাগিয়ে দিবেন।

৭. যদি বলে যে, এই নেন এই তাবিজটা/কবচটা গলায়/হাতে/কোমড়ে পড়েন। কারণ প্রায় ৯৯% তাবিজেই শিরক, কুফর বিদ্যমান। (যাদের ভ্রুকুঞ্চিত হয়েছে তারা এই লেখাটা পড়তে পারেন ঝাড়ফুঁক জায়েজ তাই তাবিজও জায়েজ? )

৮. যদি বলে, চোখ বন্ধ করুন। কিছু একটা দেখতে পাবেন। যখন দেখতে পাবেন তখনই ধরে ফেলবেন। অথবা বলবে যখনই দেখবেন তখনই দু’হাতে মশা মারার মত করে মারবেন।

৯. আপনারা হয়তো অনেক কবিরাজকে দেখে থাকবেন, যারা বলে গরু লাগবে, মুরগি লাগবে, ছাগল লাগবে তাহলে আপনার কাজ হবে। তাদের অনেকে নিজে এসব শয়তানের নামে বলি দেয়, আর অনেকে বলে “জবাই করার পর রক্তটা দিবেন।” তাঁরা এই রক্ত শয়তানের উপাসনায় ব্যবহার করে। যাদুবিদ্যায় বিভিন্ন মৃত প্রাণীর রক্ত ব্যবহার করা খুবই কমন ব্যাপার।

বাংলাদেশের কবিরাজ/হুজুররা আরও কিছু কাজ করে থাকে যেমনঃ

১। কাপড় মাপে, কাপড় ছোট বড় করে দেখায়। একই ভাবে হাত মেপে হাত ছোট বড় দেখায়।

২। মুখে দেখেই অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কথা বলে এবং কিছু কিছু মিলেও যায়।

৩। জ্যোতিষিদের মত হাত দেখে। হাজিরা দেখে, ইস্তেখরার কথা বলে মানুষ কে ইস্তেখরার অপব্যাখা দেয়।

৪। কোন কিছু পুতে রাখার জন্য বলে।

৫। জ্বিন বোতলে বন্দি করে রেখেছে, জ্বিনকে অমুক জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছে, জ্বিন রক্তে মিশে গেছে -এই জাতীয় উদ্ভট কথা বলে।

৬। কবিরাজদের একদল নিজের নামের শেষ “শাজলী” যোগ করে। ওরা বলে “সাহাবি জিন” নাকি ওদের খেদমত করে।

৭। সাত ঘাটের পানি লাগবে, অমুক জায়গায় মাটি লাগবে ইত্যাদি অর্থহীন কাজ করবে।

৮। অন্য জনের উপর জ্বিন হাজির করে তাকে দিয়ে কথা বলাবে ।

৯। শনিবারে যেতে হবে, মঙ্গলবার যেতে হবে, মাগরিবের পর যেতে হবে -ইত্যাদি অনর্থক শর্ত আরোপ করবে।

১০। নির্দিষ্ট জিনিস খাওয়া নিষেধ করতে পারেন। যেমন,কলা খাওয়া নিষেধ, গোশত খাওয়া যাবে যাবে না- খেলে ওষুধ কাজ করবে না। অন্যকোন ওষুধ খাওয়া যাবে না -ইত্যাদি বলতে পারে।

১১। তুলা রাশির লোক লাগবে -এসব বলতে পারে।

১২. জ্বিনের বাদশা বা জ্বিন হুজুর বা জ্বিনের সাহায্যে কাজ করে।

১৩. মন্ত্র পড়বে তাও চুপে চুপে শব্দ না করে, বা জোরে দোয়া পড়বে আস্তে আস্তে মন্ত্র পড়বে যেন আপনে বুঝতে না পারেন।

গোপন অঙ্গে টার্স করতে চাইবে, অনেকে ভিডিও কলে উলঙ্গ করে ঝড়বে, ছবি চাইবে, গোপন ছবি চাইবে।

১৪. সরিষার তেল পড়া, সুতা পড়া বালু পড়া তাবিজ কবজ দিবে, আসনে বসে কাজ করবে।

জিনের মাধ্যমে কাজ করবে।

১৫. প্রেম ভালোবাসার তাবিজ দিবে বা বশিকরন করবে।

১৬. এমন অরুচিকর কাজ করবে বা কিছু করতে বলবে বা খাইতে দিবে যেটা আপনার জন্য কষ্টকর এবং অন্যদের কাছে বলতে লজ্জা বোধ করবেন ।নন মাহরাম নারীদের গায়ে টার্চ করবে, খারাপ নজবে তাকাবে।

১৭. পুতুল দিয়ে বান মারার কাজ করে বা মন্ত্র পড়ে নামের ও মায়ের নামের উপর চালান করে।

মানুষ বা প্রাণীর হাড্ডি, কবরের মাটি, শশানের কয়লা, মন্দিরের মাটি, লাসের কাপর ফাসির দড়ি, গুকরের দাত, হরিনের চামড়া, বানিয়া দোকানে পাওয়া যায় এমন জিনিস ব্যবহার করবে।

১৮. যদি জিগ্যাস করবেন কোথায় কাজ শিখেছেন, বলবে অমুক পীর, ফকির হুজুর বা গুরুর কাছে। ১০-১৫ মিনি

টের বেশি ঝাড়ে না।

কিভাবে বুঝবেন সে রাকি কিনা?

১.রাকির চেম্বারে গেলে অন্য রোগীর অপেক্ষা করার চিত্র দেখবেন না। কিন্তুু কবিরাজের কাছে গেলে দেখবেন কয়েজন একই টাইমে চিকিৎসারর জন্য গেছে।

২.আর রাকিরা কয়েক ঘন্টা তেলওয়াত করবে কুরআনের আয়াত, হাদিসের দোয়া এবং জায়েজ দোয়া উচ্ছ আওয়াজে, যাহার অর্থ বুঝা যায় এবং স্পষ্ট। কিন্তু কবিরাজ ৫ মিনিটে মন্ত্র পড়ে চিকিৎসা করবে।

৩ রাকিরা পানি পড়া, মধু পড়া, অলিভ। ওয়েল, কালোজিরা বা কালোজিরার তেল পড়ে দিবে।

ব্যতিক্রম কিছু রাকি বুমি করাবে, সোনাপাতা খেতে বলতে পারে বা হিজামা করার পরামর্শ দিবে, খেজুর খেতে বলতে পারে।

৪. বরইপাতার গোসল, মাসনুন আমল, রুকইয়াহ আয়াত, কুরআনের সূরা বা আয়াত পড়তে দিবে বা অডিও শুনতে দিবে।

৪. রাকিরা তাবিজ ও সরিষার তেল পড়ে দিবে না, অলিভ ওয়েল সাজেস্ট করবে।

প্রেম ভালো বাসার তাবিজ বা তদবীর দিবে না, হারাম কোন কাজ করবে না, পর্দা রক্ষ করবে ও আপনার দিকে বার বার খারাপ দৃষ্টিতে তাকাবে না, জ্বিনের সাহায্য নিবে না, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে এবং আপনাকে পড়তে বলবে, মারহাম অভিভাবক সাথে নিয়ে যেতে বলবে।

৫. রাক্কির চেম্বারে গেলে দেখবেন সাউন্ডসিস্টেমের ব্যবস্হা আছে যাহা কবিরাজরা ব্যবহার করে না। তবে হোম সার্ভিসের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিষয় ।

৬. রাকিরা হাজিরা বা ইস্তেখারার নামে ভন্ডামি করে না, জ্বিনের সাহায্য নিয়ে শিিরক করে না, আল্লাহর সাহায্য নেয়।

কন্সালটেন্সি বা ডায়াগোনাইসিস করে সমস্যা নির্নয় করে। আপনার সমস্যা জিগ্যাস করবে বিন্তারিত জানবে ।

কিন্তুু কবিরাজরা আপনার নাম ও মায়ের নাম বলার সাথে সাথে আপনার ইতিহাস শুনার আগেই আপনার সমস্যা বলে দিবে কারিন জ্বিনের সাহায্যে।

তাবিজ সম্পর্কে হাদিস

باب فِي تَعْلِيقِ التَّمَائِمِ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ الْجَزَّارِ، عَنِ ابْنِ أَخِي، زَيْنَبَ امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ زَيْنَبَ، امْرَأَةِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ ” . قَالَتْ قُلْتُ لِمَ تَقُولُ هَذَا وَاللَّهِ لَقَدْ كَانَتْ عَيْنِي تَقْذِفُ وَكُنْتُ أَخْتَلِفُ إِلَى فُلاَنٍ الْيَهُودِيِّ يَرْقِينِي فَإِذَا رَقَانِي سَكَنَتْ . فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّمَا ذَاكِ عَمَلُ الشَّيْطَانِ كَانَ يَنْخَسُهَا بِيَدِهِ فَإِذَا رَقَاهَا كَفَّ عَنْهَا إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيكِ أَنْ تَقُولِي كَمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا ” .

মুহাম্মাদ ইবন আলা (রহঃ) …. আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ মন্ত্র, তাবিজ ও তাওলা১ করা শিরক। একথা শুনে যয়নব (রাঃ) বলেনঃ তুমি এ কি বলছ, আল্লাহর শপথ! আমার চোখে ব্যথা হলে আমি একজন ইয়াহূদীর কাছে যেতাম, যে মন্ত্র পাঠের পর আমার চোখে ফুঁ দিলে ব্যথার উপশম হতো। তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেনঃ এতো শয়তানের অপকর্ম ছিল, যে তার হাত দিয়ে চোখে ব্যথা দিত। আর যখন ঐ ইয়াহূদী তাতে ফুঁ দিত, তখন সে বিরত থাকতো। তোমার জন্য তা-ই পাঠ করা উচিত ছিল, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করতেন। আর তা হলোঃ হে মানব জাতির রব! যন্ত্রণা দূর করে দিন, আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্যদাতা, আপনার দেয়া নিরাময়ই যথার্থ নিরাময়, যার পরে আর কোন রোগ বাকী থাকে না।

♦তাবিজ যে সমস্যা বাড়ায় সে সম্পর্কে হাদিস

بَاب تَعْلِيقِ التَّمَائِمِ

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي الْخَصِيبِ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُبَارَكٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَأَى رَجُلاً فِي يَدِهِ حَلْقَةٌ مِنْ صُفْرٍ فَقَالَ ” مَا هَذِهِ الْحَلْقَةُ ” . قَالَ هَذِهِ مِنَ الْوَاهِنَةِ . قَالَ ” انْزِعْهَا فَإِنَّهَا لاَ تَزِيدُكَ إِلاَّ وَهْنًا ” .

২/৩৫৩১। ইমরান ইবনুল হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির হাতে পিতলের বালা পরিহিত দেখে জিজ্ঞেস করেনঃ এই বালাটা কী? সে বললো, এটা অবসন্নতা জনিত রোগের জন্য ধারণ করেছি। তিনি বলেনঃ এটা খুলে ফেলো। অন্যথায় তা তোমার অবসন্নতা বৃদ্ধিই করবে।

কিছু আলেমের মতে তাবিজ জায়েজ যদি কোরানের আয়াত হয় , কিন্তু জয়েজ হলে ও নাপাক লাগলে উল্টা কাজ করে, জীন তাড়ানোর তাবিজে নাপাক লাগলে বা মহিলাদের অপবিত্র সময় মনের অজান্তে হাত লাগলে উল্টা কাজ করে, তখন জীন তাড়ানোর বদলে জীন এসে দেহে বাসা বাধে, যাহা কবিরাজ ও বুজতে পারে না, ওই সব কবিরাজদের ক রুকিয়াহ করলেও তাদের শরীরে জিনের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, যদিও আমরা তাদের বড় হুজুর মনে করি।

আল্লাহ যেন আমাদের বুঝার ও আমল করার তওফিক দেন করুক, আমীন।

parthoko

সম্পর্কিত পোস্ট

Ruqyah vs Blackmagic

Facebook Twitter LinkedIn রুকইয়াহ বনাম কবিরাজি কিভাবে বুঝবেন আপনে  রাকির কাছে গিয়েছেন নাকি কবিরাজ/যাদুকরের কাছে গিয়েছেন? …………………………………………………………………………………………………… কিভাবে বুঝবেন সে যাদুকর /কবিরাজ কিনা? ১. নাম

বিস্তারিত পড়ুন »

🟥🟥🟥 বদনজর কালোযাদুতে আক্রান্ত কিনা শিওর হওয়ার উপায়। 🟥🟥🟥

🛑অনেকে জিগ্যেস করে,“আমার আসলে সমস্যা আছে কিনা কিভাবে শিওর হবো?”✅উত্তর: রুকইয়াহ চলাকালীন সময় তেলওয়াত করার সময় যদি ভিতরে ভিতরে কোন প্রকার খারাপ লাগা কাজ করে

বিস্তারিত পড়ুন »

প্রশ্ন: সুস্থ হওয়ার জন্য কত বার রুকইয়াহ করতে হয় বা কত সেশন লাগে?

প্রশ্ন: সুস্থ হওয়ার জন্য কত বার রুকইয়াহ করতে হয় বা কত সেশন লাগে? উত্তর: আল্লাহ ভালো জানে,এটা ফিউচারের বিষয়, কত বার রুকইয়াহ করলে আল্লাহ আপনাকে

বিস্তারিত পড়ুন »
×